কৃষ্ণে করলে লিলা-খেলা

লিখেছেন লিখেছেন সচেতন মুসলিম ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৫:৫৩:২৮ বিকাল

ওগো আমার মাশুক মাওলা! আপনি আপনার

কুদরতি নজরে আমার দিকে চাহিয়া দেখুন। আমি এখন আমি নই। আমি আপনি হইয়াছি, আর আপনি আমি হইয়াছেন। আমি হইয়াছি তন,

আপনি হইয়াছেন জান। আমি শরীর আপনি প্রাণ। এরপর আর কেহ বলিতে পারেনা যে আমি একজন আপনি আর একজন। বরং আমি ও আপনি এক হইয়া গিয়াছি।

আপনিতো আপনি, আমিও

আপনি।

মনসুর হাল্লাজ এরূপ আল্লাহ পাকের মোরাকাবা করিতে করিতে আল্লাহর নূরের মধ্যে গরক হইয়া হঠাৎ একদিন বলিতে লাগিলেন আনাল হক (আমি খোদা)। যে যতই তাহাকে নিষেধ করিল, ইমান যাওয়ার ও কাফের হওয়ার ভয় দেখাইল; কিন্তু কিছুতেই বিরত হইলেন না ও ঐ কথা থেকে আর ফিরিলেননা। সদা বলিতেই রহিলেন আনাল হক (আমি খোদা)।

ছাহেবান! দোস্তের গালিও মজা লাগে। মানসুরের

খোদায়ী দাবীর কথা শুনিয়া আল্লাহ্

পাক গোস্বা হন নাই বরং খোশ

হইয়াছেন। যেমন শায়ের বলিয়াছেন-

গোফতে ফেরাউনে আনাল হক গাস্তে পস্ত,

গোফতে মনছুরে আনাল হক গাস্তে হাস্ত।

মরদুদ ফেরাউন আল্লাহ পাকের শত্রু; সে বড়াই করিয়া "আনাল হক" বলার কারনে খোদার গজবে পড়িয়া ধ্বংস হইয়া গিয়াছে এবং মানছুর হাল্লাজ আল্লাহ পাকের আশেক মাওলার মহব্বতের জোশে "আনাল হক" বলিয়া খোদার নূরের সাথে মিশিয়া চির অমর হইয়া রহিয়াছেন।

নাউযুবিল্লাহ!

তার মানে কি দাড়াইল? কৃষ্ঞে করলে লিলাখেলা???

ঠিক তাই। পীরে বললে হয় বুজুর্গী। আর অন্যরা বললে হয় শিরকী।একটাই দাবী করল দুই জনে। নিজেদেরকে আল্লাহ দাবী করল। যা স্পস্ট শিরক। বড় শিরক। অথচ তাদের একজন পীর আর একজন কাফির।

আশ্চর্য্যঃ

বিষয়: বিবিধ

১৮৫৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

266901
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১৩
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
266913
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৩৩
আহ জীবন লিখেছেন : ভাই আমি বিতর্ক করবো না, শুধু বলি আপনি সচেতন মুসলিম হিসেবে এই বিষয় গুলি আলোচনা না করলেও পারেন। বিষয় গুলির ব্যাখ্যা দেওয়ার মত ব্লগে কেউ নেই। শুধু শুধু বিরোধীর হাতে একটা অস্ত্র তুলে দেওয়ার কোনও মানে নেই। কাদা ছোড়া ছুড়ি হলে আলটিমেটলি ইসলামের ই ক্ষতি।

পড়ে মন্তব্য টি মুছে দিবেন। দয়া করে।
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৪২
210654
ইমরান ভাই লিখেছেন : আহজীবন,
আপনি কোনটাকে কাদা ছোড়াছুড়ি বলছেন ভাই। উপরের প্রথম দিকের লেখা গুলো চরমোনাই পীরের কিতাবের লেখা। এ সম্মন্ধ্যে আপনার আমার মতো বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন করা দরকার নাকি অন্য দেশের???
গোটা দেশে চরমানাইয়ের মুরিদ কতো জানেন?? তারা তাদের পীরের এমন লেখা কি জানে??? আসলে তারা তো অন্ধভক্ত। তাদের অন্ধত্ব ছুটাতে হবে। লেখক ঠিকই করেছে যে তিনি মুসলিমদেরকে এহেন শির্ক আকিদা থেকে বাচাতে চাচ্ছে।
এটা বিরোধীদের হাতে তুলে দেয়া হাতিয়ার না, এটা সঠিককে জানানো।

আপনি না জানলে অন্যদেরকে জানতে দিন আর সাথে নিজেও জানুন প্লিজ। Love Struck Love Struck
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৫০
210656
আহ জীবন লিখেছেন : যখন বলেছি বিতর্ক করবনা ঠিক আছে আপনারা চালিয়ে যান।
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩৪
210697
ইমরান ভাই লিখেছেন : বিতর্ক করার কিছু নাই তবে সঠিকটা জানতে তো দোষ নাই। নিচে আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া থেকে কমেন্ট দিয়েছি দেখুন ভাই। Love Struck
266919
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৫৯
ইমরান ভাই লিখেছেন : (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১১নামার খন্ড, মনছুর হাল্লাজের জিবনী।)

ونحن نعوذ بالله أن نقول عليه ما لم يكن قاله أو نتحمل عليه في أقواله وأفعاله
আমরা আল্লাহ তায়ালার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি’ কারো বিরুদ্ধে এমন মতবাদ বা এমন কাজের কথা বলতে যা তার মধ্যে নাই বা যা সে করে নাই।

নাম; হুসাইন ইবনে মানছুর ইবনে মাহমী আল-হাল্লাজ আবু মুগীছ। এবং তাকে আব্দুল্লাহ ও বলা হত। তার দাদা ছিল অগ্নি পূজক। তার (দাদার) নাম ছিল মাহমী। সে ছিল পারস্যের বাইযা শহরের অধিবাসী।

মানছুর হাল্লাজ প্রথমে বাগদাদে আসে। আর মক্কায় বার বার আসা যাওয়া করত। প্রচন্ড ঠান্ডা ও গরমের সময়েও সে মসজিদে হারামে খোলা আকাশের নীচে বসে থকত। সারা বৎসর ব্যাপী সে নাস্তার সময় কিছু রুটি খেত ও পানি পান করত। সে জাবালে আবি-ক্বুবাইসে প্রচন্ড গরম পাথরের উপর বসে থাকত। সে সূফী স¤্রাটদের সংশ্রব গ্রহন করেছিল। যেমন; জুনাইদ ইবনে মুহাম্মদ, আমর ইবনে উসমান মাক্কী, আবুল হুসাইন নুরী।
খতীব বাগদাদী বলেন, সুফিরা মানছুর হাল্লাজের ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেছে। সুফিদের অধিকাংশই হাল্লাজকে তাদের দলভুক্ত মনে করত না। এবং তারা অসম্মত ছিল হাল্লাজকে তাদের মধ্যে গণণা করতে। কিছু সূফী হাল্লজকে তাদের অর্ন্তভূক্ত মনে করত। যেমন; আবুল আব্বাস ইবনে আতা বাগদাদী, মুহাম্মদ ইবনে খাফিফ সিরাজী, ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মদ নাছরাবাজী নাইছাবোরী। তারা মানছুর হাল্লাজের অবস্থা গুলোকে ছহীহ বলে প্রচার করত ও তার কথাগুলো লিখে রাখত। এমন কি ইবনে খাফিফ বলত; হাল্লাজ হচ্ছে আলেমে রব্বানী। আবু আব্দুর রহমান আস-সালামী বলেন; (তার নাম হচ্ছে মুহাম্মদ ইবনে হুসাইন) আমি ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মদ নাছরাবাজীকে বলতে শুনেছি; কেউ হাল্লাজকে কোন কারণে তিরষ্কার করছিল,তখন সে বললঃ যাকে তোমরা নিন্দা করছ প্রকৃতপক্ষে নবী ও সিদ্দীক্বীনদের পরে যদি কোন মুয়াহ্হীদ থেকে থাকে তাহলে সে হচ্ছে হাল্লাজ। আবু আব্দুর রহমান বলেন আমি মনছুর ইবনে আব্দুল্লাহকে বলতে শুনেছি, আমি শিবলীকে বলতে শুনেছি; সে বলত আমি এবং হাল্লাজ একই। তবে হাল্লাজ হচ্ছে প্রকাশ্যে আমি হচ্ছি গোপনে। এবং তার থেকে ভিন্ন আরেকটি বর্ণনা আছে তা হল; সে যখন হাল্লাজকে শুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখল তখন সে বলল, আমি তোমাকে পৃথিবী থেকে নিষেধ করি নাই।

খতিব বাগদাদী বলেন; যারা হাল্লাজকে সূফীদের অর্ন্তভূক্ত মনে করত না তারা হাল্লাজকে সম্পৃক্ত করত ধোকাবাজদের সাথে। এবং তারা মনে করত সে হচ্ছে একজন যিন্দিক। আর হাল্লাজ ছিল মিষ্ট ভাষী এবং সূফী তরীকার উপর তার অনেক কবিতা রয়েছে।

খতিব বাগদাদী বলেন, হাল্লাজের কতল পর্যন্ত তার বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। অথচ ফোকাহায়ে কেরাম এর ইজমার উপর ভিত্তি করেই তাকে কতল করা হয়েছে। সে ছিল একজন কাফির, যিন্দিক ও ধোঁকাবাজ। আর সূফীদের অধিকাংশ এই মতই পোষণ করতেন।

মানছুর হাল্লাজের বাহ্যিকতা ছুফিদের ধোকায় ফেলেছে। তারা তার অদৃশ্যের ব্যাপারে জানত না। কারণ; প্রথমে সে খুব ইবাদত করত; এবং সূলূকের লাইনে চলত। কিন্তু সে ছিল মূর্খ। তার কাজের কোন ভিত্তি ছিল না। তার বাহ্যিক অবস্থা ছিল তাকওয়ার উপর। এজন্যই সে ভালর চেয়ে খারাপটাই বেশী করত। সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা বলেন-
من فسد من علماءنا :كان فيه شبه من اليهود: من فسد من عبادنا: كان فيه شبه من النصاري.
অথ্যাৎ, “আমাদের আলেমদের মধ্য থেকে যে ভ্রান্ত হয়ে যায় তার মাঝে ইয়াহুদীদের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। আর আবেদগণের মধ্য থেকে যে ভ্রান্ত হয়ে যায় তার মাঝে খৃষ্টানদের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।”
আর এজন্যই হাল্লাজের মধ্যে হুলোলের (বান্দার মাঝে আল্লাহ্ তা’আলার মিশ্রণ হওয়া) আক্বিদাহ প্রবেশ করেছিল।
মানছুর হাল্লাজ বিভিন্ন শহরে আসা যাওয়া করত এবং সে মানুষের সামনে নিজেকে একজন দায়ী হিসাবে প্রকাশ করত। এবং ছহীহ ভাবে প্রমাণিত আছে সে হিন্দুস্থানে এসেছিল এবং যাদু শিখিয়েছিল। এবং সে বলত আমি এর (যাদু) মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করি। হিন্দুস্থানের লোকেরা তাকে মুগীছ (সাহায্যকারী) বলে ডাকত। ছুরকিছানের লোকেরা তাকে মুক্বীদ (খাদ্য দানকারী)বলে ডাকত। খুরাসান বাসীরা তাকে মুমাইয়িয (পার্থক্যকারী) বলে ডাকত। পারস্যবাসীরা তাকে আবু আব্দিল্লাহ যাহেদ বলে ডাকত। খুজেসতান বাসীরা তাকে আবু আব্দিল্লাহ যাহেদ হাল্লাজ আল-আসরার বলে ডাকত। আর বাগদাদ বাসীরা তাকে মুসতালাম বলে ডাকত। আর বসরাবাসীরা তাকে মুহাইয়ির বলে ডাকত। মানছুরকে হাল্লাজ নাম করণের কারণ হচ্ছে, সে মানুষের গোপন বিষয় প্রকাশ করত। কেউ বলেন হাল্লাজ একবার কোন এক ব্যক্তিকে বলল, তুমি আমার অমুক কাজগুলো করে দাও। অতপর ঐ ব্যক্তি বলল আমি তুলার বীজ বাছাই করতে ব্যাস্ত আছি। তখন মানছুর হাল্লাজ ঐ ব্যক্তিকে বলল, যাও আমি তোমার কাজ করে দিচ্ছি। ঐ লোকটি দ্রুত কাজ সমাপ্ত করে এসে দেখল মনছুর হাল্লাজ তুলা থেকে বীজ আলাদা করে বাছাই করে রেখেছে। বলা হয় হাল্লাজ সুরমার কাঠি দিয়ে ইশারা করলে তুলার বীজ আলাদা হয়ে যেত। (ইবনে কাছীর রহঃ) বলেন শয়তান তার সাথীদেরকে এ জাতীয় কাজে সাহায্য করে এবং তাদের মাধ্যমে কাজ নেয়। আর সে হুলোলের বিশ্বাসী ছিল যা তার কবিতা থেকে বুঝে আসে।

جبلت روحك في روحي كما ... يجبل العنبر بالمسك الفنق ... فإذا مسك شيء مسني ... وإذا أنت أنا لا نفترق
১. তোমার রুহ আমার রুহে এমন ভাবে প্রবেশ করেছে, যেমনিভাবে মৃগনাভীর সাথে কোমল পানির মিশ্রণ হয়।
সুতরাং যখন কোন জিনিস তোমাকে স্পর্শ করে তা যেন আমাকেই স্পর্শ করে। অতএব তুমিই আমি, আমাদের মাঝে কোন পৃথকতা নেই।
وقوله ... مزجت روحك في روحي كما ... تمزج الخمرة بالماء الزلال ... فإذا مسك شيء مسني ... فإذا أنت أنا في كل حال
২. তোমার রুহ আমার রুহের সাথে এমন ভাবে মিশ্রণ ঘটেছে যেভাবে পানির মিশ্রণ ঘটে রঙ্গের সাথে। সুতরাং যখন কোন জিনিস তোমাকে স্পর্শ করে তা যেন আমাকেই স্পর্শ করে। অতএব সর্ব অবস্থায় তুমিই আমি, এবং আমিই তুমি ।

وقوله أيضا ... قد تحققتك في سر ... ي فخاطبك لساني ... فاجتمعنا لمعان ... وافترقنا لمعان ... إن يكن غيبتك التعظي ... م عن لحظ العيان ... فلقد صيرك الوج ... د من الأحشاء دان
৩. নিঃসন্দেহে আমিই তুমি , সুতরাং তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করা মানেই হচ্ছে আমার পবিত্রতা ঘোষণা করা। এবং তোমার একাত্ব মানেই হচ্ছে আমার একাত্ব, এবং তোমার অবাধ্যতা মানেই হচ্ছে আমার অবাধ্যতা।

وقد أنشد لابن عطاء قول الحلاج ... أريدك لا أريدك للثواب ... ولكني أريدك للعقاب ... وكل مآربي قد نلت منها ... سوى ملذوذ وجدي بالعذاب ...

فقال بانن عطاء قال هذا ما تزايد به عذاب الشغف وهيام الكلف واحتراق الأسف فإذا صفا ووفا علا إلى مشرب عذب وهاطل من الحق دائم سكب وقد أنشد لأبي عبدالله بن خفيف قول الحلاج ... سبحان من أظهر ناسوته ... سرسنا لاهوته الثاقب ... ثم بدا في خلقه ظاهرا ... في صورة الآكل والشارب ... حتى قال عاينه خلقه ... كلحظة الحاجب بالحاجب ...

فقال ابن خفيف علا من يقول هذا لعنه الله فقيل له إن هذا من شعر الحلاج فقال قد يكون مقولا عليه وينسب إليه أيضا ... أوشكت تسأل عني كيف كنت ... وما لاقيت بعدك من هم وحزن ... لا كنت لا كنت إن كنت أدري كيف كنت ... ولا لا كنت أدري كيف لم أكن ...

قال ابن خلكان ويروى لسمنون لا للحلاج ومن شعره أيضا قوله ... متى سهرت عيني لغيرك أو بكت ... فلا أعطيت ما أملت وتمنت ... وإن أضمرت نفسي سواك فلا زكت ... رياض المنى من وجنتيك وجنت ... ومن شعره أيضا ... دنيا تغالطني كأن ... ي لست أعرف حالها ... حظر المليك حرامها ... وأنا أحتميت حلالها ... فوجدتها محتاجة ... فوهبت لذتها لها ...

وقد كان الحلاج يتلون في ملابسه فتارة يلبس لباس الصوفية وتارة يتجرد في ملابس زرية وتارة يلبس لباس الأجناد ويعاشر أبناء الأغنياء والملوك والأجناد وقد رآه بعض أصحابه في ثياب رثة وبيده ركوة وعكازة وهو سائح فقال له ما هذه الحالة يا حلاج فأنشأ يقول ... لئم أمسيت في ثوبي عديم ... لقد بليا على حر كريم ... فلا يغررك أن أبصرت حالا ... مغيرة عن الحال القديم ... فلي نفس ستتلف أو سترقى ... لعمرك بي إلى أمر جسيم ... ومن مستجاد كلامه وقد سأله رجل أن يوصيه بشيء ينفعه الله به فقال عليك نفسك إن لم تشغلها بالحلق وإلآ شغلتك عن الحق وقال له الرجل عظني فقال كن مع الحق بحكم ما أوجب

(ইমাম ইবনে কাছীর (রহঃ) বলেন), হাল্লাজ শেষে স্থির থাকতে পারেনি । এবং সে ভুলে পতিত হয়েছে এবং সে বক্রপথ অবলম্বন করেছে,গোমরাহী ও বিদআতে লিপ্ত হয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে এর থেকে পানাহ চাই।
আবু আবদুর রহমান সালামী আমর ইবনে উসমান মাক্কী থেকে বর্নণা করেন, তিনি বলেন, আমি হাল্লাজের সাথে মক্কার কিছু জায়গায় হাটছিলাম ও কোরআন তিলাওয়াত করছিলাম হাল্লাজ আমার তিলাওয়াত শুনে বলল কোরআনের মত আমিও বলতে পারি। অতপর আমি তার থেকে পৃথক হয়ে গেলাম। খতীব বাগদাদী বলেন মাসউদ ইবনে নাসের বর্র্নণা করেন, ইবনে বাকু সিরাজী থেকে বর্ননা করেন, আমি আবু যুর’আ তাবারী থেকে শুনেছি তিনি বলেন, মানুষ এর মধ্যে কেউ হাল্লাজকে গ্রহন করেছে আবার কেউ প্রত্যাখান করেছে। মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহ্ইয়া রাজী বলেন, আমি শুনেছি আমর ইবনে ওসমান হাল্লাজকে লানাত করেছে এবং সে বলত আমার শক্তি থাকলে হাল্লাজ কে আমি নিজ হাতে হত্যা করতাম। আমি তাকে বললাম হাল্লাজকে কিসের উপর পেয়েছ? সে বলল আমি কোআনের আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তখন সে বলল, আমি ক্ষমতা রাখি এমন কোরআন লিখতে এবং বলতে। আবু যুর’আ তাবারী বলেন আমি আবু ইয়াকুব আকতাহ্ কে বলতে শুনেছি, সে বলল আমি আমার মেয়েকে বিবাহ দিলাম, যখন সুলুকের লাইনে হাল্লাজের সুন্দর পদ্ধতি ও প্রচন্ড চেষ্টা দেখলাম। তার কিছুদিন পরে আমার কাছে বিকশিত হল যে সে হল একজন যাদুকর ও ধোঁকাবাজ ভেল্কীবাজ ও কাফের। ইমাম ইবনে কাসীর বলেন, এই বিবাহ মক্কায় হয়েছিল। মেয়ের নাম ছিল উম্মুল হুসাইন বিনতে আবু ইয়াকুব আক্তা। মেয়েটির ঘরে একটি সন্তান হয়ে ছিল যার নাম আহমদ ইবনে হুসাইন ইবনে মানসুর। আহমদ (হাল্লাজের পুত্র) তার বাবার জীবনিতে ঐ কথাগুলোই উল্লেখ করেছেন যেগুলো খতীব বাগদাদী বলেছেন।
আবুল কাসেম কুশায়রী তার রেসালায় উল্লেখ করেছেন হেফজ কুলুবুল মাশায়েখ অধ্যায়ে যে, আমর ইবনে ওসমান মক্কায় হাল্লাজের নিকট গিয়েছিল। তখন সে একটি পাতায় কিছু লিখছিল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, এটা কি? সে বলল, “ইহা কেরআনের বিপরীত লিখা হচ্ছে।” কুশায়রী বলেন অতপর হাল্লাজের জন্য বদ দু’আ করা হল। এরপর সে আর সফল হতে পারেনি। আর ইয়াকুব আক্তা হাল্লাজের সাথে তার মেয়ের বিবাহের ব্যপারটি অস্বীকার করল । আমর ইবনে ওসমান চিঠি লিখে বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়ে দিল যাতে মানুষদেরকে হাল্লাজের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। অতপর হাল্লাজ বিভ্রান্ত অবস্থায় শহরে ঘুরতে লাগল। আর লোকদের সামনে নিজেকে আল্লাহর দিকে আহবানকারী হিসাবে প্রকাশ করত। আর এতে বিভিন্ন ভেল্কির সাহায্য নিত। এভাবেই সে চলতে ছিল। এমনকি আল্লাহ্ তা’আলা তার এই অনিষ্ঠতা থেকে রক্ষা করল শরীয়াতের ফায়সালায় তাকে হত্যা করে। যে ফায়সালা জিন্দিক ছাড়া অন্য কারো উপর হয় না। আর হাল্লাজ কোরআনের উপর আক্রমন করেছিল। আর সে তা করতে চেয়েছিল হারাম শরীফে অথচ আল্লাহ তা’আলা জিব্রাইলের মাধ্যমে নাযিল করেছেন, وَمَنْ يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
এখানে (মসজিদে হারামে) যে-ই সততা থেকে দূরে গিয়ে জুলুমের পথ অবলম্বন করবে তাকেই আমি যন্ত্রনাাদায়ক আযাবের স্বাদ আস্বাদন করাব। (সূরা: হজ্ব ২০)

হাল্লাজের এই কাজের আর কি কাজ এমন হতে পারে যা সত্য থেকে দূরে সরায় তার কাজগুলি মক্কার কাফের কুরাইশদের কাজের সাথে সদৃশ্য রাখে। যেমনটা আল্লাহ বলেছেন,
وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا قَالُوا قَدْ سَمِعْنَا لَوْ نَشَاءُ لَقُلْنَا مِثْلَ هَذَا إِنْ هَذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ
যখন তাদের সামনে আয়াত তিলাওয়াত করা হয় তখন তারা বলে আমরা তা শুনলাম, আমরা যদি চাই তাহলে এই কোআনের মত আমরাও কিছু বলতে পারি। এতো সেই সব পুরনো কাহিনী যা আগে থেকে লোকেরা বলে আসছে (সূরা: আনফাল, ৩১)

(أشياء من حيل الحلاج)
হাল্লাজের ভেল্কিবাজী

(হাল্লাজের কিছু ভেল্কিবাজী): খতীব বাগদাদী রহ: বর্ননা করেন, হাল্লাজ তার সহযোগীদের মধ্য থেকে বিশেষ একজনকে নির্দেশ দিল পাহাড়ি এলাকার বাহিরে যেতে। আর সেখানে গিয়ে প্রথমে বেশী বেশী ইবাদাত ও দুনিয়া বিমুখতা যেন প্রকাশ করে। কারন মানুষ যখন তার ইবাদত দেখবে তাকে তারা গ্রহন করে নিবে ও বিশ্বাস করে নিবে যে এই লোকটা খুবই ভাল। এই অবস্থা তৈরী হলে সে যেন প্রকাশ করে যে সে অন্ধ হয়ে গিয়েছে। লোকেরা তার চিকিৎসা করতে চেষ্টা করলে যেন তাদের বলে হে কল্যানের জামাত, তোমাদের এই চেষ্টার কোন ফায়দা হবেনা। এর কিছুদিন পর যেন প্রকাশ করে যে সে রাসূল (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখেছে। এবং রাসূল (সাঃ) তাকে বলেছে কতুবের সাহায্য ছাড়া তুমি সুস্থ্য হবে না। অচিরেই কুতুব সাহেব তোমার কাছে আসবে অমুক মাসের এই দিনে। তার গুণসমূহ হবে এমন এমন। হাল্লাজ তাকে বলল ঐ সময় আমি তোমার কাছে আসব। অতপর লোকটি ঐ শহরে চলে গেল এবং অনেক ইবাদত করে নিজেকে প্রকাশ করল ও কোরআন পাঠ করত। কিছুদিন এভাবেই থাকল। লোকেরা তাকে পছন্দ করল এবং অনেক ভালবাসল। হঠাৎ একদিন সে প্রকাশ করল যে সে অন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু সময় এ অবস্থায় থাকার পর সে প্রকাশ করল যে আমি পঙ্গু হয়ে গিয়েছি। তখন ঐ এলাকার লোকেরা তাকে সবধরনের চিকিৎসা করাল। কিন্তু এতে কোন ফল পাওয়া গেলনা। তখন সে লোকদের ডেকে বলল, ওহে কল্যানের জামাত তোমরা যা করছ এতে আমি সুস্থ্য হবনা কারন আমি স্বপ্নে দেখেছি রাসূল (সাঃ) আমাকে ঘুমের ঘরে বলছেন তোমার সুস্থতা অমুক কুতুবের হাতে। অচিরেই সে তোমার কাছে আসবে। তখন লোকেরা তাকে প্রথমে মসজিদে না নিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গেল। কিন্তু পরে তাকে অনেক সম্মান করতে শুরু করল অতপর হাল্লাজের বেধে দেওয়া সময়ে হাল্লাজ এ শহরে গোপনে প্রবশ করল। তার গায়েছিল সাদা রংয়ের পশমি পোষাক। সে মসজিদে প্রবেশ করল এবং একটি কোনে বসে ইবাদত করতে লাগল আর সে কারো দিকে তাকাত না। হল্লাজের সাথীর বর্ণনাকৃত গুন অনুপাতে লোকেরা তাকে চিনল। তার সাথে মুসাফা করল, সালাম দিল ও সম্মান করল এবং অন্ধ ব্যক্তিকে তা জানানো হল। সে বলল তার গুনগুলি বর্ণনা কর। লোকেরা গুণ বর্ণনা করলে সে বলল এ তো ঐ ব্যক্তি যার ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) আমকে বলেছেন যে, তোমার সুস্থতা অমুক কুতুবের হাতে। সুতরাং তোমরা আমাকে ঐ ব্যক্তির কাছে নিয়ে চল। লোকেরা তাকে নিয়ে গেল। তাকে চিনল এবং বলল হে আল্লাহর বান্দা, রাসূল (সাঃ) স্বপ্নে আমাকে আপনার কথা বলেছেন। পুরো স্বপ্নের কথা সে বলল হাল্লাজ তা শুনে দুহাত দুআর জন্য উপরে উঠাল এবং তার জন্য দু’আ করল। তারপর তার লালা নিয়ে অন্ধ ব্যক্তির চোখে লাগালে তার চোখ এমন ভাবে ভাল হল যেন পূর্বে তার চোখ অন্ধই ছিলনা এমন মনে হল। অতপর তার লালা পঙ্গু ব্যক্তির পায়ে লাগালে সাথে সাথে সে ভাল হয়ে হাটতে লাগল যেন ইতপূর্বে তার কোন রোগই ছিল না। সেখানে ঐ এলাকার লোক সকল ও এলাকার আমীর উপস্থিত ছিল তখন লোকেরা জোরে চিৎকার করে উঠল এবং তাকবির দিয়ে প্রকম্পন সৃষ্টি করল এবং তাসবিহ পাঠ করল। আর লোকেরা হাল্লাজকে অনেক অনেক সম্মান করতে লাগল। এ এলাকার লোকেরা হাল্লাজকে এত বেশী ভালবেসে ফেলল যে, সে যা চাইত তা তারা দিয়ে দিতে প্রস্তুত হয়ে গেল। হাল্লাজ ঐ এলাকা থেকে চলে যাওয়ার ইচ্ছে করল। তখন লোকেরা তাকে অনেক মাল জমা করে দিতে চাইলে সে বলল, আমি এই এলাকায় পৌছেছি দুনিয়াকে পরিত্যাগের মাধ্যমে। সুতরাং আমার ধন সম্পদের প্রয়োজন নেই তবে তোমাদের ঐ সাথীর প্রয়োজন থাকতে পারে কেননা তার অনেক অবদাল সাথী রয়েছে যারা জিহাদ করে হজ্ব করে এবং সদকা করে। তখন ঐ অন্ধ ব্যক্তি (হাল্লাজের সাথী) বলল হা’ আমাদের শাইখ সত্য বলেছেন যার মাধ্যমে আল্লাহ আমায় দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আমি বাকী জীবন জিহাদে কাটাব এবং বাইতুল্লায় আমার আবদাল সাথীদের সাথে হজ্বের মাধ্যমে , অতপর হাল্লাজ লোকদের কে উদ্ধুদ্ধ করলেন তার সাথীকে মালা দিতে। অতপর হাল্লাজ ঐ স্থান ছেড়ে চলে গেল। আর ঐ লোক কিছুদিন লোকদের মাঝে থেকে অনেক সম্পদ একত্রিত করে হাল্লাজের কাছে চলে আসল এবং দুজন এগুলোকে বন্টন করে নিয়েছিল।

আব্দুর রহমান সালামী বলেন আমি ইব্রাহীম ইবনে মুহাম্মদ ওয়ায়েজ থেকে শুনেছি যে আবু বকর ইবনে মামশাজ বলেন দায়নুয়ে আমাদের কাছে এক ব্যক্তি উপস্থিত হল যার ঘাড়ে সবসময় একটি গাট্টি ঝুলানো থাকত। তার গাট্টি থেকে আমরা তালাশ করে একটি হাল্লাজের চিঠি পেয়েছি। যার হেডলাইন ছিল রাহমানুর রাহিম এর পক্ষ থেকে(লেখা চিঠি) অমুকের নিকট। অতপর ঐ লোক ও চিঠিসহ ইরাকে পাঠানো হল। হাল্লাজকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তা স্বীকার করল যে, এই চিঠি তার নিজের লেখা। তখন বাগদাদের লোকেরা তাকে বলল তুমি (ইতিপূর্বে) নবী দাবী করেছিলে, এখনতো দেখা যাচ্ছে তুমি ইলাহ দাবি ও রব দাবি করছ! সে বলল না, কিন্তু আমার কাছে তো শুধু জমাকৃত, আর লেখকতো একমাত্র আল্লাহই, অন্য কেউ না। আমিতো একটি যন্ত্রমাত্র। তখন তাকে বলা হল তোমার সাথে এই মতের আর কেউ আছে কি? তখন সে বলল হ্যাঁ আছে ইবনে আতা এবং আবু মুহাম্মদ হারিরিও আবুবকর শিবলী। আবু হারিরিকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলল হাল্লাজের কথা শাস্তিযোগ্য। শিবলীকে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল যে এমন বলবে তাকে বাধা দেওয়া হবে। এমনকি এই চিঠিই তার ধ্বংসের কারণ হয়ে দাড়ায়। আবু আব্দুর রহমান সালামী মুহাম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান রাজী থেকে বর্ণনা করেন ওজীর হামেদ আক্কাস যখন হাল্লাজকে উপস্থিত করলেন তখন হাল্লাজকে তার আক্বীদার ব্যপারে জিজ্ঞেস করলে সে তার আক্বীদার কথা স্বীকার করেছে। অতপর তা লিখে ইরাকের ফুকাহায়ে কিরামকে জিজ্ঞেস করা হল। তখন ইরাকের ওলামাগন ঘোষনা করলেন এবং তা লিখে ওজীরের কাছে পাঠানো হল। অতপর অজীর ইবনে আতাকে তার বাড়িতে ডেকে নিলেন এবং মজলিসের মাঝে বসিয়ে ইবনে আতাকে হাল্লাজের আক্বীদা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন ইবনে আতা বলল, যে ব্যক্তি এমন কথা বলে তার কোন আক্বীদা নেই। তখন ইবনে আতা অজীরকে বলল তোমার কি হল? এই ওলীদের নেতার কথায়। তখন অজীর, ইবনে আতার চোয়াল কেটে ফেলার নির্দেশ দেয় এবং তার মাথায় আঘাত করতে নির্দেশ দেয় এভাবে তাকে মারতে থাকে। তার কিছুদিন পর তার হাত পা কেটে ফেলা হয়। সাতদিন পর সে মৃত্যুবরণ করে। বাগদাদের উলামায়ে কিরাম হাল্লাজের কুফরির ব্যপারে ঐক্যমত পোষন করেছেন উল্লেখ্য যে, ঐ সময় বাগদাদ ছিল ইলমের কেন্দ্র। খতীব বাগদাদী বলেন, হাল্লাজ শেষবারের মতো বাগদাদে এসেছিল এবং সূফীদের সঙ্গ দিয়েছে। বাগদাদের অজীর হামিদ ইবনে আব্বাস এর কাছে এই সংবাদ পৌছল যে হাল্লাজ অনেক মানুষদেরকে গোমরাহ করছে এবং লোকদের কাছে এটাও ছড়াচ্ছিল যে, সে মৃতকে জীবন দিতে পারে । জ্বীনরা তার খেদমত করে এবং যে যা চায় তা উপস্থিত করে দেয়। এবং আলী ইবনে ঈসার কাছে এক বক্তির নাম আলোচনা করা হলো, যাকে মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে কানাবী কাতেব বলা হতো। সে হাল্লাজের ইবাদত করত এবং মানুষদেরকে তার আনুগত্যের গিকে আহবান করত। তখন মুহাম্মদ ইবনে আলী কানায়ীকে গেফতার করা হলে এ বিষয়গুলো সে স্বীকার করল। গ্রেফতারের সময় কানায়ীর বাড়ী থেকে হাল্লাজের কিছু লেখা পাওয়া যায় । যেগুলো স্বর্ণপানী দ্বারা লেখাছিল রেশম কাপড়েরর উপর এবং সেখানে একটি থলে পাওয়া যায়। যাতে হাল্লাজের পশ্রাব পায়খানা এবং হাল্লাজের রুটির কিছু অংশ ও তার অন্যন্য জিনিসপত্র। মুকতাদীরের পক্ষ থেকে অজীরকে ডাকা হল এবং হাল্লাজের বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব দিল। তখন অজীর হাল্লাজের সাথীদের একটি জামাতকে এনে ধমকালো তখন তারা স্বীকার করল যে, হাল্লাজ হল আল্লাহর সাথে আরেক ইলাহ এবং সে মৃতকে জীবিত করতে পারে। এভাবেই তারা হাল্লাজকে উন্মোচন করেছিল। তখন আলী ইবনে ঈসা তাদেরকে প্রত্যাখান করল এবং মিথ্যাবাদী বলে হাল্লাজের ব্যপারে বলল আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই এমন লোক থেকে যে নিজেকে নবী দাবী করেছে এবং ইলাহ ও রব দাবী করেছে।

আমি একজন সালেহ ব্যক্তি বেশী বেশী সালাত ও সাওম আদায়কারী আর শাহাদাতাইনের উপর আমি কোন জিনিস বৃদ্ধি করবনা এবং আলী ইবনে ঈসা পরে অনেক বেশী বেশী আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইত। অজীর হামিদ আব্বাস সতর্ক হওয়ার পূর্বে তার এখানে সকলেই প্রবেশ করতে পারত। একজন আসত যার নাম কখনো বলত হুসাইন ইবনে মানসুর আবার কখনো বলত মুহাম্মদ ইবনে আহমদ কায়েমী। আর হেরেমের একজন যার নাম ছিল নাসরাল হাজের। সে মানসুর হাল্লাজের ধোঁকায় পরে গিয়েছিল। সে ধারণা করেছিল যে হাল্লাজ একজন নেককার লোক। অতপর হাল্লাজ এর ব্যপারে খলিফা মুকতাদির বিল্লাহ জানতে পারলে তাকে গ্রেফতার করে হামিদ ইবনে আব্বাসের কাছে হস্তান্তর করে দেয়। সে তাকে জেলে বন্দি করে রাখে। অতপর সকল ফুকাহায়ে কেরাম তার কুফুরির ব্যাপারে ও যিন্দিকের ব্যপারে ফতওয়া দেয় এবং সে একজন যাদুকর। এই ফতোয়ার পর হাল্লাজের সাথীদের মধ্যে থেকে দু’জন ফিরে এসেছিল। একজন হল আবু আলী হারুন ইবনে আব্দুল আজীজ আওরাজী, আরেকজন হল দাব্বাস। তারা দুজনই হাল্লাজের হটকারিতা ও যাদুকরী ও মানুষদেরকে মিথ্যা ও ভেলকীবাজীর দিকে আহবান করত তা খুলে খুলে বলল। হাল্লাজের এই ধেকাবাজীকে আরও স্পষ্ট করার জন্য সুলাইমানের মেয়ে (হাল্লাজের স্ত্রী)কে উপস্থিত করা হল। তখন সে হাল্লাজের আরও অনেক দোষ-ত্রুটির কথা বলেন। সে বলল আমি একদিন ঘুমন্ত অবস্থায়, সে আমার উপর বসে বলল নামাজের জন্য উঠ। হাল্লাজের ইচ্ছা হল তার সাথে সহবাস করবে এবং হাল্লাজ তার মেয়েকে নির্দেশ দিল যে, সে যেন হাল্লাজকে সিজদা করে। তখন তার স্ত্রী তাকে বলল মানুষ কি মানুষকে সিজদা করে? তখন হাল্লাজ বলল হ্যাঁ এক ইলাহ আকাশে, আরেক ইলাহ জমীনে। অতপর সে তাকে নির্দেশ দিল তার আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে যা সম্পদ চাই তা নিতে সে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে দেখল সেখানে অনেক দিনার দিরহাম।
হাল্লাজকে নিয়ে সর্বশেষ কাজী আবু ওমর মুহাম্মদ ইবনে ইউছুফকে উপস্থিত করা হল এবং হাল্লাজকে আনা হল এবং হাল্লাজের লিখিত একটি কিতাবও উপস্থিত করা হল। তখন তার কিতাবে একটি লেখা পেল যাতে লিখা আছে যে কোন ব্যক্তি হজ্ব করার ইচ্ছা করল, কিন্তু সামর্থ নেই, তখন সে যেন তার বাড়ীতে একটি ছোট গৃহনির্মান করে যাতে কোন ধরনের নাপাকি থাকবেনা এবং অন্য কেউ যেন সেখানে প্রবেশ না করতে পারে। যখন হজ্বের সময় হবে তখন তিনদিন রোজা রাখবে এবং ঐ ঘরটার চারপাশে তাওয়াফ করবে, যেভাবে কা’বাকে তাওয়াফ করা হয়। অতপর সে যেন হজ্বের কাজগুলো তার ঘরে করতে থাকে। অতপর ত্রিশজন ইয়াতিমকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবে এবং তাদের খেদমত করবে এবং তাদের সকলকে একটি করে জামা পরাবে ও সবাইকে সাত অথবা তিন দিরহাম করে দেবে। হজ্বের জন্য ইচ্ছা পোষণ কারী এমন করলে তার হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। এবং যে ব্যক্তি তিনদিন রোজা রাখবে আর চতুর্থদিন তা ভাঙবে, সে একমাস রমজানের রোজা রাখার সমপরিমান সওয়াব অর্জন করবে।
আর যে ব্যক্তি রাত্রের শুরু থেকে নিয়ে শেষপর্যন্ত দুইরাকাত সালাত (নামাজ) পড়বে। এরপর তার সারা জীবনের নামাজের পরিমান সওয়াব পাবে। আর যারা শহীদদের ও কুরাইশদের কবরের পাশে দশদিন থাকবে, নামাজ পরবে ও রোজা রাখবে, ইফতার করবে একটি রুটি ও লবণ দ্বারা, তাহলে বাকী জীবনে তার ইবাদতের জন্য যথেষ্ট হবে। তখন কাজী আবু উমর হাল্লাজকে জিজ্ঞেস করল এগুলো তুমি কোথায় পেয়েছ। হাল্লাজ বলল আমি এগুলি হাসান বসরীর ইখলাছ নামক কিতাবে পেয়েছি। তখন কাজী আবু উমর বলল হাল্লাজ তুমি মিথ্যা বলছ। তোমার রক্ত হালাল। আমি হাসান বসরীর কিতাব মক্কায় শুনেছি অথচ তাতে এই জাতীয় কোন কিছু লেখা নেই।

অতপর অজীর কাজীর কাছে আসল এবং বলল সে যে হালানুদ্দাস তাহা কাগজে লিখেদিন। কাজীসাহেব তাহা লিখে দিলে অজীর কাগজটিকে মুক্তাদির কাছে পাঠাল। তখন হাল্লাজ বন্দী অবস্থায়। মুক্তাদিরর এর অনুমোদন দিতে তিনদিন দেরী করল এবং অজীর হামিদ আব্বাসের ব্যপারে খারাপ ধারনা করে বসল। তখন সে খলিফার নিকট একটি চিঠি লিখল যে হাল্লাজের বিষয়টি অনেক প্রচারিত ও প্রসিদ্ধ। তার ব্যপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। সে অনেক মানুষকে গোমরাহ করেছে। অতপর খলিফার পক্ষ থেকে উত্তর আসল যে হাল্লাজকে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুস সনামাদ জেলার এর কাছে হস্তান্তর কর এবং তাকে একহাজার বেত্রাঘাত করতে বল, যদি হাল্লাজ বেতের আঘাতে মরে যায় তাহলে ত হলই, অন্যথায় তার গর্দান উড়িয়ে দেবে। অজীর খলিফার এই নির্দেশে খুবই খুশী হল। এবং জেলার কে ডেকে তার হাতে হাল্লাজকে তুলে দেওয়া হল।
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৩
210708
আহ জীবন লিখেছেন : ইমরান ভাই আমি বাংলা শিক্ষিত মানুষ অতও কিছু জানিনা। আপনার এই কমেন্টে অনেক কিছু জানলাম। পোস্ট টি প্রিয় করে রাখলাম।
266957
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৬
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : ধর্ম নিয়ে গৃহযদ্ধ করতে করতে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে ইসলাম পন্থিরা। ধর্মকেও পচাচ্ছে। আল্লাহ জানে কবে তাদের শুভবুদ্ধি উদয় হবে।
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৫
210711
আহ জীবন লিখেছেন : ভুট্টো ভাই আমি স্রেফ এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলাম। আমারি দোষ বুঝাতে পারিনি।
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:০৯
210829
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : দোষ আপনাদের কারো না। দোষ ইসলামের। নয়ত ইসলাম নিয়ে আপনাদের এতো টানাটানি কেন??

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File